ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ : আতঙ্কে ভোলার উপকূলের বাসিন্দারা!
আপলোড সময় :
২৩-১০-২০২৪ ০৭:১৭:১১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৩-১০-২০২৪ ০৭:১৭:১১ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : ফোকাস বাংলা নিউজ
দেশের সর্বদক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবস্থিত দ্বীপ জেলা ভোলা। এ জেলার উত্তরে ইলিশা নদী, পশ্চিমে তেঁতুলিয়া, পূর্বে ভয়াল মেঘনা ও সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মাঝে ভোলা। এখানে প্রায় ২১ লক্ষ মানুষের বসবাস। বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন হওয়ায় এ জেলার মানুষকে প্রতিনিয়ত ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সাথে লড়াই করে বাঁচতে হয়। প্রতিবছর বর্ষার সিজনে একদিকে নদী ভাঙ্গন অন্যদিকে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে প্রাণহানিসহ বহু পরিবারকে নিঃস্ব ও সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসতে হয়। জেলার মূল ভূখণ্ডের বেঁড়িবাধের বাইরে রয়েছে ও অর্ধশতাধিক বিচ্ছিন্ন চর। অধিকাংশ চরে মানুষ বাসবাস করে জীবিকার তাগিদে চাষাবাদ ও মৎস আহরণ করে। ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সময় হঠাৎ জোয়ার পানিতে ডুবে যায় চরগুলো। এতে ভোগান্তি ও কষ্টের শেষ নেই উপকূলীয় বেঁড়িবাধের বাহিরে থাকা মানুষগুলোর।
গত কয়েক মাসে আগে ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে জেলার মনপুরা, চরফ্যাশন, তজুমদ্দিন ও লালমোহন উপজেলার মোট ২১টি চরের সবগুলোই অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে কম-বেশি প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৭ হাজার ঘরবাড়ি বিধস্ত হয়েছে জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে শত শত গরু মহিষ। পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল। তবে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে ঢাল চর, চর পাতিলা, চর নিজাম ও চর কলাতলিতে। জোয়ারে পানিতে বিচ্ছিন্ন উপজেলা মনপুরা উপকূলের ৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়। আজও ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণরুপে সংস্কার করা হয়নি। এর মধ্যে মনপুরার শহর রক্ষা বাঁধটি পুরোপুরি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অদক্ষতা ও গাফিলতিকে দায়ী করে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যে কোন সময় বিধ্বস্ত শহর রক্ষা বাঁধ ও ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে ভেসে যেতে পারে। এতে আসন্ন ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’কে কেন্দ্র করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে মনপুরাসহ জেলার উপকূলের তিন লাখ মানুষ।
মনপুরার বাসিন্দারা জানান, ভাঙা বেড়িবাঁধ ও শহর রক্ষা বাঁধ মেরামত না করায় ঘূর্ণিঝড় “দানা”র প্রবাহে জোয়ারে মনপুরা উপজেলা নিম্নঅঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। এতে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাবে উপজেলা পরিষদ, হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ, থানা ও বিদ্যুৎ অফিসসহ হাট-বাজার। এতে অসংখ্য প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
তারা আরো জানান, মনপুরা শহর রক্ষা বাঁধটি ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। এখন পর্যন্ত পাউবো বাঁধটি মেরামত করেনি। শুনেছি ঘূর্ণিঝড় 'দানা' আগের ঘূর্ণিঝড় থেকে শক্তিশালী। এতেই পুরো উপকূলীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসফাউদৌলা বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। শহর রক্ষা বাঁধটি মেরামত করা হবে।
জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ মোকাবিলায় প্রস্তুত সিপিপি ও রেড-ক্রিসেন্টসহ ১৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবী। প্রস্তুতি হিসেবে জেলার ৭ উপজেলায় ৯৮টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে জেলার ৭৮৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১৭টি মাটির কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বাংলা স্কুপ/ফরহাদ হোসেন/ভোলা প্রতিনিধি/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স